পশুর ক্ষুরা রোগ ও প্রতিকারঃ রিপন সরকার। Ripon Sarkar
বাংলাদেশের সব ঋতুতেই ক্ষুরারোগ দেখা গেলেও সাধারণত বর্ষার শেষে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়।তীব্র প্রকৃতির ভাইরাসজনিত রোগের মধ্যে ক্ষুরারোগ অন্যতম।বয়স্ক গরুর মৃত্যুহার কম হলেও আক্রান্ত বাছুরকে বাঁচিয়ে রাখা খুবই কঠিন। অর্থাৎ ৬ মার বয়সের নীচে আক্রান্ত বাছুরের ৯৫ শতাংশই মারা যায়।বাছুর যেহেতু বাচানো যায়না তাই ; তাদেরকে আক্রান্ত গরু থেকে আলাদা করে দিতে হবে এবং আক্রান্ত গাভীর দুধ খাওয়ানো যাবে না।
চিকিৎসাঃ
১) মূল ব্যবস্থাপনা ২) তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং ৩) খাবার ব্যবস্থাপনা ।
১) মূল ব্যবস্থাপনাঃ
---আক্রান্ত পশুকে সুস্থ প্রাণী থেকে আলাদা রাখতে হবে।
---কোন অবস্থায়ই কাদা মাটি বা পানিতে রাখা যাবে না।
---অসুস্থ প্রাণীর ক্ষত ধৌত করতে হবে পটাশ মিশ্রিত পানি (০.০১ শতাংশ পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট) অথবা খাবার সোডা মিশ্রিত পানি দিয়ে ( এক বালতি পানিতে ৩ থেকে ৪ চামচ করে খাবার সোডা/ সোডি বাই কার্ব) বা ফিটকিরির পানি ১০ গ্রাম (২ চা চামচ) ১লিটার পানিতে মিশিয়ে মুখ পরিস্কার করতে হবে।
--- মুখে ও জিহ্বাতে পানি দিয়ে পরিষ্কার করার পর জিহ্বায় ও মুখের ভিতরে Apthocare পাউডার হাতে নিয়ে জিহ্বায় ঘষে দিতে হবে । তবে বাজারে স্বর্নকারের দোকান থেকে সোহাগা কিনে পাতিলে খই এর মতো ভেজে ভালো করে বেটে মধুর সাথে মিশিয়ে জিহ্বায় লাগালে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে ।
---পায়ে সুমিডভেট পাউডার + তামাক পাতা তাপে সেকে পাউডার করা + এক চা চামচ ফিটকারি পাউডার + মেরিল ভেসলিন বা নারিকেল তেল দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগালে দ্রুত কাজ করবে।(তবে ঔষধ লাগানোর পূর্বে পায়ের ঘা হাইড্রোজেন পার অক্সাইড দ্বারা পরিস্কার করলে ভাল ফল পাওয়া )
২) তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
--- তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য ketoprofen গ্রুপের ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন (যেমনঃ কিটোভেট; কিটো এ; কপ ভেট ইত্যাদি )। এর সাথে ব্যবহার করতে হবে Antihista গ্রুপের ঔষধ (যেমন হিস্টাভেট; এন্টিহিস্টা)। ঘা হতে ব্যাক্টেরিয়া আক্রান্ত হয়ে যেন পচন না লাগে তার জন্য ব্যবহার করতে হবে Oxytetracyclin LA গ্রুপের ড্রাগ (যেমনঃ রেনামাইসিন এল এ) তবে দুধের গাভী অথবা গর্ভবতী গরুর জন্য ( Amoxycilin or combind drug যেমনঃ মক্সাসিল; এমক্সিভেট )
ব্যবহার করতে হবে। (ডাক্তারের পরামর্শক্রমে)
৩) খাবার ব্যবস্থাপনা ।
মুখে ঘা থাকার কারণেন শক্ত খাবার খেতে চায় না ; ্দানাদার খাবার জাও করে খাওয়াতে পারলে ভালো অথবা পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে । ঘাসের ক্ষেত্রে কচি ঘাস টুকরা করে কেটে দিতে হবে অথবা খড় টুকরা করে পানিতে ভিজিয়ে দিতে হবে । খাবারের অভাবে গরু যেন দুর্বল হতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে । সাধারনত এক থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে গরুগুলো সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
No comments:
Post a Comment