শেয়ার ব্যবসা শিক্ষাঃ টেকনিক্যাল এনালাইসিস, ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এবং সেন্টিমেন্টাল এনালাইসিস
যে কোন বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হলে সে ব্যাপারে শিক্ষা লাভ, অনুশীলন এবং গবেষণা করতেই হয়। পাঠ, শ্রবণ, দর্শন তথা শিক্ষালাভ, অনুশীলন ও গবেষণালব্ধ জ্ঞানের ফল হলো অভিজ্ঞতা। শেয়ার বাজারে লাভের জন্য অভিজ্ঞতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
মূলতঃ কোন একটি বিষয় নিয়ে বিষদ বিশ্লেষণ হলো এনালাইসিস। সুতরাং শেয়ারবাজারে কোন একটি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিষদ বিশ্লেষণ বা গবেষণাকেই শেয়ার এনালাইসিস বলা হয়। অর্থাৎ কোনো কোম্পানির শেয়ার প্রাইজ এবং কোম্পানির বর্তমান অবস্থার বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করাকেই এনালাইসিস বলে। এই এনালাইসিসে আপনার তথ্য ভান্ডার যত বেশী সমৃদ্ধ হবে বা বেশী হবে আপনার এনালাইসিস ফলাফল তত বেশী সফল হবার সম্ভাবনা থাকে।
এবার জানা যাক, শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রে কত প্রকারের এনালাইসিস জানা দরকার।
সাধারণত শেয়ার/স্টক এনালাইসিস ২ প্রকার হয়। যেমনঃ
০১. ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস ও
০১. ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস ও
০২. টেকনিক্যাল এনালাইসিস।
তবে এখানে আরও একটি এনালাইসিস আছে তা হলো ০৩. সেন্টিমেন্টাল এনালাইসিস।
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস সম্পর্কে আলোচনার আগে সেন্টিমেন্টাল এনালাইসিস টা আলোচনা করা যাক।
মূলত এটি কোন এনালাইসিস নয়। একজন বিনিয়োগকারী কখনই কোন কারণ ছাড়া বিনিয়োগ করেন না। আসলে শুধু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নয় আমরা কখনই কোন কাজ কারণ ছাড়া করি না। বিনিয়োগকারী যখন কিছু না জেনে, না বুঝে, অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে বা যখন নিজের আবেগের উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ করেন তখন তাকে সেন্টিমেন্টাল এনালাইসিস বলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সকল বিনিয়োগকারী ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এবার আসি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কি ?
একটি কোম্পানির বর্তমান বাস্তবিক বাজার অবস্থার পর্যালোচনা করাকে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস বলে। এখানে কোম্পানির বাস্তবিক বাজার অবস্থা বলতে কোম্পানির ব্যবসার বৃদ্ধি কেমন বা কোম্পানিটি কত টাকা লাভ করতে পেরেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে এ অবস্থাগুলো বোঝা যায় কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনগুলো দেখে। তাই যখন আমরা কোন কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন গুলো তথ্য বিশ্লেষন করে কোন শেয়ার নির্বাচন করব তখন তা ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর আওতাভূক্ত হবে।
সাধারণত এ এনালাইসিস ফলফল দীর্ঘমেয়দী হয়ে থাকে ও বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমান বেশী হয়ে থাকে এবং ঝুঁকির পরিমানও অনেক কম হয়ে থাকে । সুবিধার পাশাপাশি যে অসুবিধাগুলো আছে তা নিয়ে পরিবর্তীতে আলোচনা করব।
যে কোন শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস একটি অপরিহার্য বিষয়।
এবার আসি টেকনিক্যাল এনালাইসিস কি ?
একটি কোম্পানির শেয়ার দর উঠানামার অর্থাৎ শেয়ার মালিকানা পাওয়ার চাহিদা ও যোগানের গানিতিক বিশ্লেষণকেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস বলে। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে আমরা জানি প্রতিটি শেয়ারের প্রাইজ/দর প্রতিদিনই উঠানামা করে অর্থাৎ এই প্রাইজ উঠানামা বিনিয়োগের আগ্রহ এবং যোগানের একটি স্বমন্বয় যেমন কেউ শেয়ার মালিকানা বিক্রি করতে চাইছে আবার কেউ ঐ শেয়ার মালিকানা ক্রয় করতে চাইছে এখানে বিনিয়োগকারীই যোগান এবং চাহিদার ভূমিকা পালন করে। তাহলে বিনিয়োগের আগ্রহ বা চাহিদার সাথে বিনিয়োগে অনাগ্রহ বা যোগানের গানিতিক বিশ্লেষণকেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস বলে। আরও সহজ ভাষায় বলতে গেলে প্রতিদিনের প্রাইজ উঠানামার গাণিতক বিশ্লেষণকেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস বলে।
সাধারণত এ এনালাইসিস সল্প মেয়াদীর জন্য হয়ে থাকে এবং এতে ঝুঁকির পরিমান যেমন বেশী তেমনী সফল হবার সম্ভাবনাও বেশী। তবে সঠিকভাবে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করতে পারলে আপনার ঝুঁকিও অনেক কম হবে এবং আপনার মুনাফাও অধিক হবে।
কিভাবে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করবেন তা নিয়ে পরবর্তীতে বিষদ আলোচনা করার চেষ্টা করব কেননা টেকনিক্যাল এনালাইসিস একটি বৃহত্তর পরিসর যা শিখতে বা বুঝতে আপনাকে অধিক সময় ব্যয় করতে হবে। তবে টেকনিক্যাল এনালাইসিস সঠিক ভাবে শেখার পর আপনার শেয়ার ব্যবসায় আমূল পরিবর্তন আসবে এবং আপনি আস্থার সাথে একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন বলে আশা রাখি।
পোস্ট টি সংগৃহীত ও কিঞ্চিৎ পরিমার্জিত
No comments:
Post a Comment